বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের ওপর চাপ কমাতে চায় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় তুলনামূলক কম প্রয়োজনীয় ১৪টি পণ্য আমদানিতে কঠোরতা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার সংকট কাটাতে সোনা, প্রসাধনী, চামড়াজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কোমল পানীয়সহ কয়েকটি বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ নগদ মার্জিন বা অগ্রিম জমা রাখতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এসংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। এ নির্দেশনা আজ থেকেই কার্যকর হবে।
নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার লক্ষ্যে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিনের হার নির্ধারণসংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিলাসজাতীয় পণ্য এবং অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত আমদানি বিকল্প পণ্যগুলোর আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।
শতভাগ নগদ মার্জিন আরোপ করা পণ্যগুলো হলো মোটর কার, ইলেকট্রনিকস হোম বা অফিস অ্যাপ্লায়েন্স, স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার, মূল্যবান ধাতু ও মুক্তা, তৈরি পোশাক (যেগুলো দেশে উৎপাদন সম্ভব), চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, আসবাব ও সাজসজ্জাসামগ্রী, ফল ও ফুল, নন-সিরিয়াল ফুড অর্থাৎ অশস্য খাদ্যপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয় বা টিনজাত (ক্যান) খাদ্য, চকোলেট, বিস্কুট, জুস, কফি, কোমল পানীয়, অ্যালকোহলজাতীয় পানীয় এবং তামাক, তামাকজাত বা এর বিকল্প পণ্য।
সাধারণত বিদেশ থেকে আমদানীকৃত পণ্য দেশে আসার পর বিল পরিশোধ করতে হয়। তবে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার সময় গ্রাহককে ব্যাংকে পণ্যমূল্যের একটি অংশ জমা দিতে হয়, যাকে এলসি মার্জিন বলে। এই মার্জিনের বিষয়টি নির্ধারিত হয় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। ব্যাংকের সঙ্গে গ্রাহকের ব্যাবসায়িক সম্পর্ক ভালো হলে ন্যূনতম মার্জিনেও এলসি খোলা হয়। আবার গ্রাহক যদি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হন, সে ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন নিয়ে এলসি খোলা হয়।