এসআইবিএলের মানবসম্পদ বিভাগ ৩১/১০/২৪ বৃহস্পতিবার এসব কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার চিঠি দিয়েছে। ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই কর্মকর্তাদের অধিকাংশ চট্টগ্রামের একটি বিশেষ এলাকার। পরীক্ষা ছাড়াই তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি আইনসম্মত ছিল না।
এসআইবিএলের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকটিতে বর্তমানে ৪ হাজার ৭০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ২ হাজার চট্টগ্রামের পটিয়ার। তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালে ৫৭৯ কর্মকর্তাকে শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব নিয়োগে কোনো ধরনের সার্কুলার, পরীক্ষা, সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করা হয়নি না।
সম্প্রতি ব্যাংকের এক পর্ষদ সভায় ৫৭৯ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। তাঁদের প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে চাকরিচ্যুতির কথা জানায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ। আজ শুক্রবার ১ নভেম্বর থেকে সেটি কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন : ন্যাশনাল ব্যাংক বিদেশি তহবিল এনে ঘুরে দাঁড়াতে চায়
নিয়োগের ১০ নম্বর ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে। চাকরিকালীন ভুল বা অবহেলায় ভবিষ্যতে ব্যাংক ক্ষতির মুখে পড়লে তার দায় চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাকে নিতে হবে, এমনটাও বলা হয়েছে চিঠিতে।
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আগের দিন রাতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। ব্যাংকটি দখলের পর চেয়ারম্যান করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফকে।
এসআইবিএলের মালিকানা পরিবর্তনের সময়ই এস আলম গ্রুপ কয়েকজন উদ্যোক্তা ও পরিচালককে বাদ দেয়। এরপর তারা ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ টাকা বের করে নেয়। যে কারণে ব্যাংকটি ইতিমধ্যে আর্থিক সংকটে পড়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবেও ঘাটতিতে রয়েছে। এই ব্যাংকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসআইবিএলকে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই সঙ্গে একজন উদ্যোক্তা শেয়ারধারীকে পরিচালক এবং আরও চারজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে।