newsinbiz.com

অর্থনৈতিক সংস্কার ও রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তার আশ্বাস বিশ্বব্যাংক ও এডিবির

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং।

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন দিক ও দুই পক্ষের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও অর্থমন্ত্রী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

আব্দুলায়ে সেক বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বেশ ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সংস্কারের বিষয়ে কথা বলেছি। এর মধ্যে আর্থিক খাত, সামাজিক সুরক্ষা জাল ও ব্যাংক খাতের সংস্কার অন্যতম। এসব সংস্কার বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংক প্রস্তুত আছে। এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৫২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে। আরো ১৬ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করে যাবে।’

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘এটি মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। তারা পরিচিত হতে এসেছিলেন। সংস্কারের বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা সার্বিকভাবে সংস্কারের কথা বলেছেন এবং এজন্য তারা সহায়তা করতে প্রস্তুত, সেটিও জানিয়েছেন। সংস্কারের তো অবশ্যই প্রয়োজন আছে। আমরা দেখি কী করা যায়। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আশা করি এটি বজায় থাকবে এবং তারা সহায়তা করবে।’

এরপর অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং। সাক্ষাৎ শেষে তিনি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সংকটের বিষয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ‘আমি মনে করি, সরকার একটি ভালো নীতির খোঁজ করছে। নীতির মধ্যেই এর সমাধান রয়েছে। আমি মনে করি, সরকার যেসব নীতি বাস্তবায়ন করেছে, সেগুলো সঠিক পথেই রয়েছে। সামনের দিনগুলোয় এসব নীতির ঘষামাজা করার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি এডিবিও সরকারকে বাজেট সহায়তা অব্যাহত রাখবে। গত বছর আমরা সরকারকে ৮০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা প্রত্যক্ষভাবে রিজার্ভে সহায়তা করেছি। বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সংস্থার সঙ্গে এডিবির কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রিজার্ভ বাড়বে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, নির্বাচনের পর আমরা মনে করছি, আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে। আমি মনে বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ সবচেয়ে বেশি রয়েছে বেসরকারি খাতে। তারা যদি এটি ফিরিয়ে আনে, তাহলে সেটি রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের সম্ভাবনার তুলনায় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ কম। এটি বাড়াতে পারলে তা রিজার্ভকে স্থিতিশীল করতে সহায়ক হবে। চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী।’

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে সাক্ষাতের পর অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এর আগেও অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি। সামনের দিনগুলোয়ও করতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি। এডিবি তো তাদের আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে। এডিবির কাছে আমাদের তো প্রত্যাশা আছেই। তারা আমাদের সহায়তা করছে।’

তাদের হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের একটু কম আছে, তবে সামনে আরো বাড়বে। মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতির মধ্যে অবশ্যই সমন্বয় থাকবে।’

Exit mobile version